Tech Bangla
Public | 21-Mar-2025

সমুদ্রের তলায় মাইক্রোসফটের ডেটা সেন্টার!

সমুদ্রের তলায় মাইক্রোসফটের ডেটা সেন্টার ভাবা যায়। ❍ মাইক্রোসফট ২০১৫ সালে প্রজেক্ট ন্যাটিক নামে একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প শুরু করে, যার লক্ষ্য ছিল সমুদ্রের তলদেশে ডেটা সেন্টার স্থাপন করা। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল এমন একটি ডেটা সেন্টার তৈরি করা, যা প্রচলিত স্থলভাগের ডেটা সেন্টারের তুলনায় শক্তি-সাশ্রয়ী, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব হবে। ❍ মাইক্রোসফট এই ধারণাকে বাস্তবে রূপ দিতে প্রজেক্ট ন্যাটিক চালু করে, যা মূলত দুটি ধাপে পরিচালিত হয়। ❍ প্রথম ধাপ (২০১৫): পরীক্ষামূলক মডেল - মাইক্রোসফট প্রথমে ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে একটি ছোট আকারের ডেটা সেন্টার স্থাপন করে। - এটি ছিল ১০৫ দিন ধরে জলের নিচে পরিচালিত একটি পরীক্ষা, যেখানে গবেষকরা দেখেন যে ডেটা সেন্টারটি কার্যকরভাবে কাজ করছে এবং কোনো বড় সমস্যা দেখা দেয়নি। - এই সাফল্যের পর, মাইক্রোসফট বৃহৎ পরিসরে পরীক্ষা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ❍ দ্বিতীয় ধাপ (২০১৮-২০২০): বৃহৎ পরিসরে পরীক্ষা। - স্কটল্যান্ডের অর্কনি দ্বীপের উপকূলে একটি ৪০ ফুট দীর্ঘ ডেটা সেন্টার স্থাপন করা হয়। - এটি ১১৭ ফুট গভীরে ডুবিয়ে দেওয়া হয়, যেখানে এটি দুই বছর ধরে পরিচালিত হয়। - এই ডেটা সেন্টারে ছিল ৮৬৪টি সার্ভার, যা লাখো মানুষের তথ্য সংরক্ষণ ও পরিচালনা করতে সক্ষম ছিল। - ২০২০ সালে, এটি সমুদ্র থেকে তুলে আনা হয় এবং গবেষকরা দেখেন যে, - সার্ভারের ব্যর্থতার হার প্রচলিত ডেটা সেন্টারের তুলনায় ৮ গুণ কম ছিল। - এটি কোনো অতিরিক্ত রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াই টানা দুই বছর কাজ করেছে। কেন সমুদ্রের নিচে ডেটা সেন্টার? ❍ প্রাকৃতিক শীতলীকরণ (Efficient Cooling System): প্রচলিত ডেটা সেন্টারগুলোতে সার্ভার ঠান্ডা রাখতে বিশাল পরিমাণ বিদ্যুৎ ও জল প্রয়োজন হয়। সমুদ্রের তলদেশে জলের স্বাভাবিক শীতল পরিবেশ থাকায় কোনো অতিরিক্ত কুলিং সিস্টেমের দরকার হয় না, যা শক্তি সাশ্রয় করে। ❍ নির্ভরযোগ্যতা ও কম রক্ষণাবেক্ষণ: - জলের নিচে ধুলোবালি, অক্সিজেনের উপস্থিতি ও আর্দ্রতা কম থাকে, যা সার্ভারের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করে। - গবেষণায় দেখা গেছে, জলমগ্ন ডেটা সেন্টারের ব্যর্থতার হার অনেক কম। ❍ নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার: - মাইক্রোসফটের এই প্রকল্পে জোয়ার-ভাটা, বায়ু ও সৌরশক্তি ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে। - এটি কার্বন নিঃসরণ কমাবে, যা জলবায়ু পরিবর্তন রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ❍ দ্রুত স্থাপনযোগ্য ও মাপযোগ্য (Scalable and Rapid Deployment) - প্রচলিত ডেটা সেন্টার তৈরি করতে অনেক মাস বা বছর লেগে যায়, কিন্তু সমুদ্রের নিচে ডেটা সেন্টার মাত্র ৯০ দিনে স্থাপন করা সম্ভব। - এটি ভবিষ্যতে উপকূলবর্তী শহরগুলোর জন্য দ্রুতগতির ক্লাউড কম্পিউটিং পরিষেবা দিতে পারবে। ❍ গবেষণার ফলাফল ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা:- - মাইক্রোসফটের গবেষকরা বিশ্বাস করেন যে, সমুদ্রের নিচে ডেটা সেন্টার প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ। - চীন ইতোমধ্যেই "আন্ডারওয়াটার ডেটা সেন্টার" স্থাপনের পরিকল্পনা করছে, যা প্রজেক্ট ন্যাটিকের মতোই। - ভবিষ্যতে, বিশ্বের ৫০% জনসংখ্যার বসবাস উপকূলীয় অঞ্চলে হবে, যেখানে এই প্রযুক্তি দ্রুতগতির ইন্টারনেট ও কম খরচে ক্লাউড পরিষেবা দিতে পারবে। ❍ মাইক্রোসফটের প্রজেক্ট ন্যাটিক প্রমাণ করেছে যে, সমুদ্রের নিচে ডেটা সেন্টার শুধু বাস্তবসম্মত নয়, বরং পরিবেশবান্ধব ও শক্তি-সাশ্রয়ীও হতে পারে। ভবিষ্যতে, এই প্রযুক্তি বিশ্বের ডেটা স্টোরেজ ব্যবস্থার কাঠামো বদলে দিতে পারে এবং একটি আরও সবুজ ও কার্যকর ডিজিটাল ভবিষ্যতের পথ তৈরি করতে পারে।
Follow Us Google News
View (3,890) | Like (0) | Comments (0)
Like Comment
Comment Box
Sponsor

For Ads

+01828-684595

www.fewlook.com

Fewlook is a world wide social media platform

Install FewLook Android Application

PlayStore Free Download Available

Install Now